গত ২৫ জানুয়ারি বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এক শুনানিতে বলেছেন, ‘পুলিশের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া, সে যে-ই হোক না কেন।’ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভা নির্বাচনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত হাজির হলে হাইকোর্টের বিচারপতিরা এ কথা বলেন।
আদালত কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘কে কোন দল, মত, আদর্শের উত্তরাধিকার-এটা বিবেচ্য বিষয় আপনার নয়। কথায় পটু হলে চলবে না, কাজে পটু হতে হবে।’
আদালতের শেষোক্ত বক্তব্যটি সম্ভবত এসপি তানভীর আরাফাতের পূর্বেকার কিছু অপেশাদারি আচরণের জন্য যথোপযুক্ত হয়েছে। কারণ, কিছুদিন আগে কুষ্টিয়ার এ পুলিশ কর্মকর্তাই ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক সমাবেশ মঞ্চে দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক নেতার মতো বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। তার সেই বক্তব্য বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিরূপ সমালোচনার সৃষ্টি হয়, যা সব পুলিশ সার্ভিসের জন্য ছিল বিব্রতকর।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসানের সঙ্গে তানভীর আরাফাত ও তার সঙ্গী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজ যে বাক্য বিনিময় করেন, তা ছিল সম্পূর্ণ অভদ্রোচিত ও মারমুখী। সংবাদপত্র জানিয়েছে, তানভীর আরাফাত নিজের আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন! তিনি আদালতকে বলেছেন, বিচারককে চিনতে না পারায় এ অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল হয়েছে। আদালতকে দেওয়া তানভীরের এ বক্তব্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তানভীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে চিনতে পারেননি বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সত্যের অপলাপ নয়তো? কারণ, খবর বেরিয়েছে, ঘটনার সময় তানভীর পরিচয় জানতে চাইলে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান নিজের পরিচয় দেন; পরিচয় দেওয়ার পরও তানভীর ও তার সঙ্গী-সাথিরা আক্রমণাত্মক ও চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এখন প্রশ্ন হলো, কার বক্তব্য সঠিক? তানভীরের বক্তব্য সত্য বলে ধরে নিলে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিনের বক্তব্য মিথ্যা হয়ে যায়। আর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিনের বক্তব্য যদি সত্য বলে ধরে নিই, তাহলে আদালতে দেওয়া তানভীরের বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আদালতে মিথ্যা বলার শাস্তি কী; তা আদালতই নির্ধারণ করবেন বলে আশা করি।
তবে সংবাদমাধ্যমের বরাতে আমরা যতটুকু জেনেছি, তাতে প্রতীয়মান হয় যে, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিনের সঙ্গে তানভীর সেদিন ঔদ্ধত্যমূলক আচরণই করেছিলেন। এমন অসভ্য আচরণে হতচকিত ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহসিন হাসান চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন।
একজন বিচারকের সঙ্গে পুলিশ এমন তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও ভীতিকর আচরণ করতে পারলে দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাহলে তারা কেমন আচরণ করতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। পুলিশের এরূপ আচরণের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। নিত্যদিন আমরা খবরের কাগজে এমন সংবাদ দেখতে পাই। এ জন্যই সম্ভবত সেদিন শুনানিতে পুলিশকে সতর্ক করে দিয়ে উচ্চ আদালত বলেছেন, ‘পুলিশের আচরণ এখনো ভীতিকর, যা কাম্য নয়। রাষ্ট্র যাতে পুলিশি রাষ্ট্র না হয়, সে বিষয়টিও মনে রাখতে হবে।’
বিচারকের সঙ্গে তানভীরের দুর্ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হন দেশের অন্য বিচারকরা। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশ সুপারকে আদালতে হাজির হয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। পুলিশ সুপার তানভীর আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।
আদালতের একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এখানে প্রণিধানযোগ্য। বক্তব্যটি হলো, ‘রাষ্ট্র যাতে পুলিশি রাষ্ট্র না হয়, সে বিষয়টিও মনে রাখতে হবে।’ বিগত কয়েক বছর ধরে পুলিশের কিছু কিছু সদস্য যেসব কর্মকাণ্ড করেছেন, আদালতের বক্তব্যে যেন সে কথাই ফুটে উঠেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, কুষ্টিয়ার ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে, যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সার্ভিসকে আরও অধিক জনবান্ধব হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার ঘটনার দিন-পনেরো আগে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৩ জানুয়ারি সারদায় পুলিশ একাডেমিতে ৩৭ বিসিএস পুলিশ ব্যাচের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে, গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লক্ষ রাখবে। এগুলো হলো : ‘জনগণের মৌলিক অধিকার’, ‘মানবাধিকার’ ও ‘আইনের শাসন’।
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে আমি আশা করি।’ প্রধানমন্ত্রী নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমার বিশ্বাস তোমরা এ দায়িত্বটা পালন করবে।
তোমরা যে জ্ঞান অর্জন করেছ, তোমাদের শৃঙ্খলা, পেশাদারিত্ব, সততা এবং নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে চলবে। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।’
শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপরোক্ত উপদেশ ও নির্দেশাবলি প্রদানকালে খোদ প্রধানমন্ত্রীও হয়তো ভাবেননি যে, তার নির্দেশের দু’সপ্তাহ যেতে-না-যেতেই কিছু জ্যেষ্ঠ সদস্য একজন সম্মানিত বিচারকের সঙ্গে সৌজন্যের সঙ্গে কথা বলা তো দূরে থাক, উলটো ভীতিকর ও মারমুখী আচরণ করে অগ্রহণযোগ্য উদাহরণ স্থাপন করবেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, কিছুদিন পরপর এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতি করে জেনেও কতিপয় সদস্য কেন নিজেদের সংবরণ করতে পারেন না? পুলিশ সার্ভিসে এমন অনেক ক্ষুরধার ও চৌকশ কর্মকর্তা আছেন যারা নিজেদের পেশাদারিত্ব ও সততার গুণে পুলিশের ভাবমূর্তি ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমার পরিচিত এমন অনেক কলিগ ও আত্মীয় পুলিশ সদস্য আছেন যাদের দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।
এ ধরনের ধারাবাহিক ঘটনায় তাদের আমি মর্মাহত হতেও দেখেছি। পুলিশের অনেক অর্জনের মধ্যে এসব ঘটনা যে সেসব অর্জনকে ম্লান করে দেয় তা নিয়ে তারা চিন্তিত। অবশ্য এসব থেকে বেরিয়ে আসার অব্যাহত চেষ্টাও যে পুলিশের অভ্যন্তরে চলছে, তা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বস্তরে এসব অপ্রীতিকর ঘটনা বন্ধের বিভিন্ন প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে।
পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্যদের মোটিভেশন এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা অনেক আগে থেকেই চালু আছে। প্রতিদিন দায়িত্ব বণ্টনের আগে কর্মকর্তারা পুলিশ সার্ভিসের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রেখে কাজ করার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। এ প্রচেষ্টার সুফল যে পাওয়া যাচ্ছে না, তা নয়। তবে এ পর্যন্ত সংঘটিত ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে যা বোঝা যায়, তা হলো পুলিশ সদস্যদের মনস্তাত্ত্বিক চিন্তাভাবনার পরিবর্তন।
বিশেষ করে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর পুলিশের কিছু কিছু সদস্যের ভেতর এমন অন্যায্য আস্থা তৈরি হয়েছে যে, তারা মনে করেন, তাদের প্রতিটি কার্যকলাপই এক ধরনের ইমিউনিটি দ্বারা প্রটেক্টেড। তাই তাদের আচরণে স্বেচ্ছাচারিতার ভাব লক্ষ করা যায়। রাজনৈতিক এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংগঠনের অভ্যন্তরীণ অশুভ পৃষ্ঠপোষকতাকে এ জন্য দায়ী করা যায়।
কিছু কিছু সদস্যের ভেতর এমন মনোভাবও কাজ করে যে, সরকার তাদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। এ কথা ঠিক, অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশই হলো দেশের সবচেয়ে বড় নির্ভরশীল সংগঠন। শুধু সরকার নয়, সব জাতিই নিরাপত্তা ও আইনি শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।
পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে যে ব্যবহার করা হয় তা অনস্বীকার্য। রাজনৈতিক কারণে পুলিশের এ যথেচ্ছ ব্যবহার বাহিনীটির অভ্যন্তরে এক ধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। আর তখনই সুযোগসন্ধানী সদস্যরা নিজ স্বার্থ হাসিলে পরিস্থিতির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে থাকেন। এ ধরনের মানসিকতাই কিছু কিছু কর্মকর্তাকে এমন গর্হিত কাজের সাহস জোগায়।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলামের ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০১৯’ উপলক্ষ্যে দেওয়া একটি বক্তব্য প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে হয়। তিনি বলেছিলেন, ‘যেসব পুলিশ সদস্য নিজেদের বাদশা মনে করেন আর জনগণকে প্রজা মনে করেন, সেসব পুলিশ সদস্যের পুলিশ সার্ভিসে দরকার নেই। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের মাথার টুপি থেকে শুরু করে পায়ের জুতা পর্যন্ত কেনা হয়। আমাদের সন্তানের লেখাপড়া থেকে শুরু করে আমাদের পেট চলা-সবকিছু হয় জনগণের টাকায়। তারপরও আমাদের কিছু পুলিশ অফিসারের ভেতরে ভাব এ রকম যে, তারা বাদশা, আর জনগণ তাদের প্রজা।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমি পরিষ্কার বলে দিতে চাই, এই বোধ নিয়ে ডিএমপিতে কেউ চাকরি করতে পারবেন না। প্রতিটি মানুষকে তাদের প্রাপ্ত সম্মান ও শ্রদ্ধা দিতে হবে।’
যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেইন অব কমান্ডের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এ ধরনের অন্যায্য পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করা না গেলে বাহিনীর অভ্যন্তরের যে কোনো ভালো উদ্যোগ সাফল্যের মুখ দেখবে না। পুলিশের পেশাগত কাজের মানোন্নয়নে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে। রাষ্ট্র যদি জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করে, তাহলে সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের বর্তমান ভাবমূর্তির কোনো পরিবর্তন ঘটবে না।
এ কথা ঠিক, পুলিশের অনেক তরুণ কর্মকর্তা আছেন, তাদের মধ্যে আগ্রহ আছে পরিবর্তনের। কিন্তু পুলিশের অভ্যন্তরে ঘুণে ধরা ঔপনিবেশিক পদ্ধতি তাদের সেই উদ্যমকে কেড়ে নেয়। এ ঘুণেধরা পদ্ধতির আমূল সংস্কারের প্রয়োজন আছে।
মনে রাখতে হবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপরাধের ধরন পালটাচ্ছে, তাই যুগোপযোগী মানবিক শিক্ষা ও সমাজের সব ধরনের অপরাধ দমনের কৌশল রপ্ত করে নিজেদের তৈরি করা পুলিশের দায়িত্ব। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পুলিশের অধিকাংশ সদস্যই সেসব গুণাবলি অর্জনে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত।
চারদিকের ঘটনা পর্যালাচনা করে দুঃখের সঙ্গে এ কথাই বলতে হয়, ১৮৬১ সালের দমনপীড়নের আইন প্রয়োগই পুলিশ সদস্যদের মূলমন্ত্র। বিশ্বমানের আধুনিক সেবাধর্মী পুলিশ গঠনের উদ্যোগে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে।
আধুনিক সেবাধর্মী পুলিশ গঠনের জন্য প্রথমেই যা প্রয়োজন তা হলো, পুলিশ সদস্যদের কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসা। পুলিশ সদস্যদের নিজেদের জনগণের সেবক ভাবতে হবে। পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ভেতর যে ভীতিকর মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করতে হলে নিজেদের আরও নমনীয় হতে হবে।
এ প্রসঙ্গে ৩ জানুয়ারি সারদা পুলিশ একাডেমিতে শিক্ষানবিশ নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ উদ্ধৃত না করলেই নয়। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া দিকনির্দেশনামূলক কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘একটা কথা ভুললে চলবে না তোমাদের, তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ, তোমরা ইংরেজের পুলিশ নও, তোমরা পাকিস্তানি শোষকের পুলিশ নও, তোমরা জনগণের পুলিশ।’
বঙ্গবন্ধু সেদিন আরও বলেছিলেন, ‘পুলিশকে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করতে হবে, মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। মনে রাখবে মানুষ যেন ভয় না করে। মানুষ যেন তোমাদের ভালোবাসে।’
তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘অনেক দেশে পুলিশকে মানুষ শ্রদ্ধা করে। তোমরা মানুষের শ্রদ্ধা অর্জন করতে শিখ।’ আমরা আশাবাদী হতে চাই। আমাদের সে আস্থাও আছে; বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে যে পুলিশ ফোর্সের প্রায় সতেরো হাজার সদস্য বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, প্রায় এক হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য শহিদ হয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথে সে পুলিশ ফোর্স একদিন তাদের লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবেই।
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা