চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী রাজধানীতে তাঁকে দেয়া সংবর্ধনা ও মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে বলেছেন ‘ইট পাথরের শহর ও কথার ফুলঝুড়ি নয় নগরবাসীর পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পরিকল্পিত পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য ও ঐতিহ্যবাহী পর্যটন নগরী করতে চাই।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবর্ধনা ও মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে চিটাগাং জার্নালিস্ট ফোরাম-ঢাকা সিজেএফডি আয়োজিত অনুষ্ঠানে চসিক মেয়র রেজাউল করিম একথা বলেন।
মেয়রকে প্রাধান্য ও কর্তৃত্বের সুযোগ দিয়ে স্থানীয় ওয়াসা, টিএন্ডটি, গণপূর্তসহ অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান প্রধানকে জবাবদিহিতার ব্যবস্থার মাধ্যমে সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা গেলে নগরীর অনেক সমস্য দ্রুত সমাধান করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ৫ বছরের মধ্যে শতভাগ না হলেও ৮০ ভাগ কাজের সুফল পাবে নগরবাসি। তিনি এজন্য নগরীর উন্নয়ন ও কল্যাণে সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সিজেএফডির সভাপতি শাহেদ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ নোমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিজেএফডির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শাহীন উল ইসলাম চৌধুরী। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এনামুল হক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মো. মোস্তফা কামাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম জাহাঙ্গীর, সিনিয়র সাংবাদিক মামুন আবদুল্লাহ, তৌহিদুর রহমান, চসিক এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক।
উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল হক, নগর যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আসহাব রসুল চৌধুরী, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম. আর আজিম, সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী। সংবর্ধনা সভায় সিজেএফডির পক্ষ থেকে ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিমকে অভিনন্দন জানানো হয়।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নোত্তরে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, আমি আবেগ তাড়িত হই না কাজে বিশ্বাসী। শহরে মশার উপদ্রব বেড়ে গেছে। একই সাথে জলাবদ্ধতা নিরসন ও রাস্তা ঘাটগুলো মেরামত করা জরুরী। প্রভাবশালীরা খাল ও নালাগুলো দখল করে রেখেছে। যতই প্রভাবশালী হউক দখলমুক্ত করে পানি চলাচলে ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি বলেন, জতির পিতা বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্তঃপ্রান আদর্শ কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও অবিচল রাজনৈতিক চর্চার জন্য আমাকে নেত্রী মূল্যায়ন করেছেন। ৫২ বছরের রাজনীতিতে অন্যায় ও কালিমা, লোভ লালসা ছিল না। আগামীতে এ আস্থা ও বিশ্বাসকে সমুন্নত রেখে নগরীকে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি বলেন, ‘সরকারী অনেক জায়গা আছে ব্যবহৃত হয়নি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে খেলার মাঠ ও কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করে সাংস্কৃতিক মঞ্চ করার ইচ্ছা আছে। এতে কিশোর গ্যাং এর অপতৎপরতা কমতে পারে। এছাড়া ৬ দফা ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের ও স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালুসহ সংগ্রাম ও বিভিন্ন ঐতিহ্যের সূতিগার চট্টগ্রাম নগরীর উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোকে সংরক্ষণ করা হবে। মেয়র ব্যক্তি চিন্তাকে ভুল হয় সমষ্টি চিন্তা ও পরামর্শে সূচারুভাবে কাজের সম্ভাবনা থাকে উল্লেখ করে এবং সকল পেশার ও বিজ্ঞজনদের পরামর্শ এবং সহযোগিতার উপর জোর দিয়ে বলেন, এ শহরে শুধু মেয়রের নয় সমগ্র নগরবাসীর। তাই উন্নয়ন সমৃদ্ধি ও কল্যাণে সকলের অংশগ্রহণ প্রয়োজন।
কোভিড-১৯ করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর গত ২৭ জানুয়ারি’ ২০২১ চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি মেয়র মো. রাজাউল করিম শপথ গ্রহণ করেন এবং আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সোমবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।