বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংঘরাজ ড. ধর্মসেন মহাস্থবির ছিলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু। তিনি প্রত্যেক ধর্মের মানুষের সাথে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। একজন গ্রহণযোগ্য ধর্মীয় গুরু হিসেবে তিনি সকলের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। চট্টগ্রামে বৌদ্ধ সম্প্রদায়রে কর্মকান্ড সবচেয়ে বেশি। বৌদ্ধ সম্প্রদায়রে সাথে চট্টগ্রামের একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে।
তিনি বলেন, বিএনপি অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। দেশের সীমানার মধ্যে ৪৭ টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী বসবাস করে। তাদের নিজস্ব ভাষা ও বর্ণমালা আছে। দেশের সীমানার মধ্যে যারা বসবাস করে তারা সবাই বাংলাদেশী। সেজন্য সবাইকে সমান সুযোগ করে দিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রচলন করেছিলেন। জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের বৌদ্ধবিহার সহ সারা দেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন বিহার গঠন করেছিলেন। তিনি রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চীন থেকে অতীশ দিপংকরের দেহাবশেষ বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিলেন।
তিনি আজ (২৫ ফেব্রুয়ারী) বৃহস্পতিবার বিকালে পটিয়ার উনাইন পুরাস্থ লংকারাম বৌদ্ধ বিহারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ে সর্ব্বোচ্চ ধর্মীয়গুরু ড, ধর্মসেন মহাস্থবির’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বিএনপি’র একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে পটিয়ার লঙ্কারাম বৌদ্ধবিহারে যান। তিনি প্রতিনিধি দল নিয়ে ড, ধর্মসেন মহাস্থবিরের শবদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
এসময় আমীর খসরু বলেন, দেশে আজকে মানুষের ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার নাই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নাই। আজকে একটা অনির্বাচিত অবৈধ সরকার দেশ শাসন করছে। আজকে ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার অবস্থা নাই। যারা অনির্বাচিত তারা দুর্নীতিবাজ হয়। তারা জনগণের মানব অধিকার কেড়ে নেয়। তাই সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ সালাম বলেন, বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু ড, ধর্মসেন মহাস্থবিরকে শ্রদ্ধা জানাতে আমরা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসেছি। দেশের এই ক্রান্তিকালে এই ধর্মীয় গুরুর মতো মানুষের খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। দেশে যখন কে হিন্দু কে মুসলিম কে বাঙালি কে পাহাড়ি এই নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল তখন শহীদ জিয়াউর রহমান বলেছিলেন আমরা সবাই বাংলাদেশি। দেশে সবার সমান অধিকার আছে। দেশ স্বাধীন করতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ রক্ত দিয়েছিল।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড, সুকোমল বড়ুয়া বলেন, বিএনপি অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে বলেই ড, ধর্মসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে। তিনি আমৃত্যু মানবতার কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি শুধু পটিয়ার নয় ,সারাদেশের জন্য গৌরব। এ ধরনের একজন ব্যক্তিত্বকে হারিয়ে আমরা সত্যিই মর্মাহত।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়দে বলেন, ড. ধর্মসেন সারা জীবন শান্তি, ঐক্য ও সাম্যের জন্য কাজ করে গেছেন। তাকে সম্মান জানাতে তার অপূর্ণ কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকল ধর্মের মানুষকে অত্যাচার অনাচারের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পটিয়া আসন থেকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক এনামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এম এ সালাম, ড, সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়দে, সদস্য সুশীল বড়ুয়া, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, অধ্যাপক জন্টু বড়ুয়া, চন্দ্র গুপ্ত বড়ুয়া প্রমূখ।