চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বাকস্বাধীনতা হরণ করেছে। সরকারের অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়া প্রতিটি কন্ঠকে স্তব্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমের স্বরকে নিস্তব্ধ করার জন্যই একের পর এক কালো আইন প্রণয়ন করেছে। বাকশালী শাসনকে চিরস্থায়ী রূপ দেয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা বিরোধী মতকে নির্মমভাবে দমন করছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে দেশের সংবিধানস্বীকৃত স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি ভয়াবহ কালো আইন। এটা হচ্ছে বিরোধী মতের মানুষকে দমন করার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। বায়ান্ন সালে যে ভাষার জন্য সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বার শহীদ হয়েছিল আজকে সেই বাংলা ভাষায় একটা লেখার জন্য লেখক মুসতাককে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে। সাংবাদিক মুসতাককে হত্যা ও কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতন মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর চরম আঘাত। অবিলম্বে এই আইন বাতিল করতে হবে।
তিনি আজ শনিবার (৬ মার্চ) বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয় মাঠে লেখক, সাংবাদিক মুসতাক ও মুজাক্কির হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, লেখক মুশতাককে যে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে কার্টুনিস্ট কিশোরের বক্তব্যে তা প্রমাণিত হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে কিভাবে কার্টুনিস্ট কিশোর ও লেখক মুশতাকের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শুধু মুশতাক, মুজাক্কির ও কিশোর নয়, এখন দেশের সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত। সাংবাদিক, পেশাজীবি, সাধারণ মানুষ কেউ এ সরকারের ছোবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এ সরকার একটি ফ্যাসিবাদী সরকার। সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আজ দুনীর্তিগ্রস্থ। এ সরকারের দুর্নীতির কারণে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশ একটি দু:শাসনের দেশে পরিণত হয়েছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দেশে এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। আজকে কেউ কথা বলতে পারে না, কেউ লিখতে পারে না। এরা এখন সম্পূর্ণভাবে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকারে পরিণত হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ হাহাকার করছে। বাজার মনিটরিংয়ে সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। নির্যাতন-নিপীড়ন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে গেছে। মানুষ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। তাদের পতন ঘটিয়ে ছাত্র-জনতা রাজপথ ছাড়বে। তিনি অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, চারদিকে লুটপাট, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। এদেশের জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার, স্বাধীনতার অধিকার ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে হবে। দল-মত-নির্বিশেষে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।
সভাপতির বক্তব্যে স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অন্যায়ভাবে ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। কারাগার থেকে মুক্ত হলেও তিনি এখন গৃহবন্দি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে একের পর এক ভিত্তিহীন মামলা দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল দীপ্ত শপথ নিয়ে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি হারুন আল রশিদ, মঈনুদ্দিন রাশেদ, এম এ সালাম, হারুন অর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া, সিঃ যুগ্ম সম্পাদক আলী মর্তুজা খান, যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দিন নাহিদ, সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল হক টুটুল, আবু বক্কর রাজু, আনোয়ার হোসেন এরশাদ, সহ-সম্পাদক আব্দুল হাই, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান আলমগীর, মনির হোসেন, শাহাদাত হোসেন সোহাগ , ইমরান চৌধুরী বাবলু, এমদাদুল হক স্বপন, মোখলেছুর রহমান, আব্দুল মান্নান, মোঃ হাসান, নিজাম উদ্দিন বুলু, রাসেল খান, মফিজ উদ্দিন সুমন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ লিটন, মোঃ হিমেল, ইকবাল হোসেন রুবেল, মোঃ সুমন, শাহজাহান বাদশা, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য লুৎফর রহমান জুয়েল, নুর আলম, কামরুল ইসলাম, সহ-সম্পাদকমন্ডলী জহিরুল ইসলাম, রাশেদ পাটোয়ারী, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, মোঃ বাকের, মোঃ পারভেজ, জাকির হোসেন মিশু, মোঃ সোহেল, শফিকুর রহমান রানা ,কার্যকরী সদস্য মেহেদী হাসান, সাজ্জাদ হোসেন খান প্রমুখ।