অ আ আবীর আকাশ,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : ঠিকাদারের খামখেয়ালিতে ভেকো দিয়ে কাজ করতেই গ্যাস ও বিটিসিএল লাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে গ্যাস লাইন ও বিটিসিএল এর লাইন। শহরের দক্ষিণ তেমুহনী এলাকায় এম এম বিল্ডার্স নামে ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ভেকো মেশিন দিয়ে কাজ করতে গিয়ে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এতে করে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বাসভবনসহ আশপাশের এলাকায় গ্যাস ও টেলিযোগাযোগ সংযোগ এবং কমলনগর ও রামগতি উপজেলার বিটিসিএল’র টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে দুই উপজেলার গ্রাহকরা। তবে এ ঘটনায় ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠানের অনভিজ্ঞতাকে দুষলেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তারা।
এদিকে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লি. ও বিটিসিএল’র কর্মকর্তারা জানালেন, ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান ও সড়ক বিভাগ তাদেরকে অবহিত না করেই খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে এ দূর্ঘটনা ঘটায়। এতে কাটা পাইপ লাইন থেকে প্রায় দুই ঘন্টা গ্যাস নির্গত হয়ে সরকারী বিপুল পরিমান টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। নষ্ট হয়েছে বিটিসিএল’র অপটিক্যাল পাইপারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। এ ঘটনায় সড়ক ও জনপদ বিভাগ উল্টো দোষারোপ করে বলছেন, দেড় মিটার গভীরে গ্যাস ও অপটিক্যাল লাইন থাকার কথা থাকলেও আধা মিটার মাটি খোড়ার পড়ে কিভাবে গ্যাস ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স এর প্রকৌশলী খন্দকার তারেক আজিজ জানান, মাটির নিচে গ্যাস ও বিটিসিএল’র লাইন সম্পর্কে তারা অবগত নন। বিষয়টি নিয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ সমন্বয় করলে এ দূর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো বলে জানান তিনি।
বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লি. লক্ষ্মীপুর শাখার সহকারী প্রকৌশলী (বিক্রয়) মো. বোরহান উদ্দিন জানান, অবগত না করে দুপুরে সড়ক খোড়াখুড়ির কাজ শুরু করা হয়। এতে গ্যাসের লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা গ্যাস নির্গত হয়ে সরকারের আর্থিক ক্ষতি সাধন হয়। এ ধরনের কাজ শুরু করার আগে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বিষয়টি আমাদের অবহিত করেনি।
এদিকে ঘটনাস্থলে এসে একই অভিযোগ করেন বিটিসিএল’ লক্ষ্মীপুর অফিসের জুনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক মো. জাফর আহমদ। তিনি জানান, খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে তাদের (৯৬ অপটিক্যাল পাইবার কোর, ২৪ পেয়ারের কোর এবং আন্ডারগ্রাউন্ড সিভিলের ইন্টারনেট লাইন) কয়েকটি সংযোগ কেটে ফেলা হয়। তাছাড়া কেন্দ্র মেশিন ভেঙ্গে যায়। এতে বিটিসিএল’র ব্যপক আথিক ক্ষতি হয় বলে জানান তিনি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হক জানান, ইতোপূর্বে ওই দুইটি সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছিলো। প্রয়োজনে আবারও চিঠির মাধ্যমে তাদেরকে অবহিত করা হবে। তবে সংযোগ লাইনগুলো দেড় মিটার গভীরে থাকার কথা থাকলেও আধা মিটার মাটি খোঁড়ার পরে কিভাবে গ্যাস ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলো তা তাঁর বোধগম্য নয় বলে জানান তিনি।
প্রঙ্গত, লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক প্রকল্প দুই প্যাকেজের আওতায় প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রশস্তকরণ কাজ করছে লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এতে কাজটি করছেন এম এম বিল্ডার্স নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।