নোয়াখালীর কৃতিসন্তান, বরেণ্য রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পঞ্চম জানাজা শেষে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কোম্পানীগঞ্জে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে। এর আগে নোয়াখালীতে তিনটি জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নামে প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে।
উপজেলার মানিকপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী মা-বাবার কবরের পাশে তার লাশ দাফন করা হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকেই কবিরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠ লোকারণ্য হয়ে যায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসেন জানাজায় অংশ নিতে। বেলা ৩টায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ। সেখানে ৩টা ৩৫ মিনিটে তার তৃতীয় জানাজা হয়। এর আগে বেলা ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদের দ্বিতীয় জানাজা হয়। আর প্রথম নামাজে জানাজা হয়েছে সকাল ১০টায় তার দীর্ঘ দিনের প্রিয় কর্মস্থল হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে।
কবিরহাটে তৃতীয় জানাজা শেষে মরহুমের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে। সেখানে ৫টা ১৫ মিনিটে জানাজা শেষে নিজ বাড়ির দরজায় নিয়ে যাওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টায় পঞ্চম জানাজা শেষে বাদ মাগরিব সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লাশ এলাকার সর্বোস্তরের হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়।
কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠে খ্যাতিমান এই রাজনীতিবিদের জানাজায় অংশ নেন, নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ লাখো মানুষ।
অপর দিকে মুজিব কলেজ মাঠে জানাজায় অংশ নেন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান, সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আলাউদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোশারেফ হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামালউদ্দিন চৌধুরী, বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খাঁন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটনসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ নেতা ১৬ মার্চ সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তার স্ত্রী হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ, মেয়ে আনা তাসপিয়া মওদুদ, দুই ভাই ও দুই বোন রয়েছে।