চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বিএনপি স্বাধীনতার ঘোষক সেক্টর কমান্ডার ও বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের দল। শহীদ জিয়া চট্টগ্রামের বিপ্লব উদ্যান থেকে উই রিভোল্ট বলে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আর সে ঘোষণায় মুক্তিকামী জনতা উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে বীর জাতি অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিল সে স্বপ্ন আজ ভূলুণ্ঠিত। সরকার আজকে স্বাধীনতা দিবসেও পুলিশ দিয়ে এই বিপ্লব উদ্যানে ফুলের শ্রদ্ধা জানাতে বাধা দিচ্ছে। পুলিশতো কোন রাজতন্ত্রের কর্মচারী নয়, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। স্বাধীনতা দিবসতো শুধু আওয়ামীলীগের নয়, এটা সমগ্র বাংলাদেশীর। এই স্বাধীনতা দিবসে ব্যানার ও জাতিয় পতাকা কেড়ে নিয়ে ফুল দিতে বাধা দিয়ে পুলিশ মৌলিক অধিকার হরণ করেছে।
তিনি আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে ষোলশহর বিপ্লব উদ্যানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়ায় তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন।
সকাল থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ পুরো বিপ্লব উদ্যান ঘিরে রাখে। মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদল সহ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিপ্লব বেদীতে ফুল দিতে চাইলে পুলিশ বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় মহানগর যুবদল, মহিলাদল ও ছাত্রদলের বিশাল বিশাল মিছিল আসলে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। পরে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হলে তাদেরকেও বিতরে ফুল দিতে বাধা দেয়। তারা উদ্যানের দক্ষিণ পাশে রাস্তায় প্রতিবাদ সমাবেশ শেষ করে ফুল দিতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে উদ্যানের গেইটে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এসময় ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মানায় না। তাদের হাতে দেশ ও স্বাধীনতা নিরাপদ নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে আওয়ামী লীগ এখন মুক্তিযু্দ্ধের চেতনা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হয়েছে। তারা ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসে মানুষের সাংবিধানিক সকল অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। দেশের প্রশাসনকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছে। এর থেকে উত্তোরনের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট ডাকাত ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও বিপ্লব উদ্যান বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত। স্বাধীন বাংলাদেশ ও জিয়াউর রহমান একে অপরের সম্পূরক । মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার অপর নাম জিয়াউর রহমান। মেজর জিয়া ছিলেন রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সেনাপ্রধান এবং বাংলাদেশের একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য স্বাধীনতাত্তোর তাকে বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়েছে। জিয়াকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস রচনা করা সম্ভব নয়। জিয়া বাংলাদেশের আপামর জনগণের হৃদয়ে মেজর জিয়া নামে প্রতিষ্ঠিত।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, আওয়ামীলীগ জোর করে ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্বাধীনতার সকল আশাগুলো ভেঙে খান খান করেছে। স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দূরে থাক বরং আরো বিভক্ত করে রেখেছে। স্বাধীনতাকে সংহত করার চেয়ে আরো দূর্বল করা হয়েছে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভ্রান্ত ইতিহাস জানিয়ে বিভ্রান্তি করা হচ্ছে। জনগনের আশা আকাংখা ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। এমন একটি সমাজ, একটি রাষ্ট্র গঠন করা হচ্ছে যেখানে ন্যায় বিচার দুষ্প্রাপ্য। বৈষ্যম আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, সৈয়দ আজম উদ্দিন, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, সদস্য নিয়াজ মো. খান, ইকবাল চৌধুরী, এস এম আবুল ফয়েজ, আহমেদুল আলম রাসেল, আনোয়ার হোসেন লিপু, মন্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, মো. কামরুল ইসলাম, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্তী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান, মহিলাদলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি, পাঁচলাইশ থানা বিএনপির সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, বায়েজিদ থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল হারুন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী, মৎসজীবী দলের আহবায়ক নুরুল হক, ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ মহানগর, ১৫ থানা ও ৪৩ ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।