সরকারি নির্দেশনা পালনের জন্য জনগনের প্রতি সুজনের অনুরোধ

210

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে নগরবাসীকে মাস্ক পরিধান করা এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

Advertisement

আজ রবিবার (৪ এপ্রিল) সকালে নগরীর প্রবেশমুখ শাহ আমানত কর্ণফুলী সেতু এলাকা ও ফিসারিঘাট এলাকায় মাস্ক, সাবান ও স্যানিটাইজার বিতরণকালে নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি এ অনুরোধ জানান।

এ সময় তিনি বলেন বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। করোনার বর্তমান স্ট্রেইন ৭০গুন বেশী সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পন্ন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জীবন ও জীবিকাকে সমুন্নত রাখার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাঁকা সচল রাখার জন্য ইতিপূর্বে বেশ কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। আমরা বুঝে অথবা না বুঝে দিনের পর দিন এসব নির্দেশনাকে অমান্য করেছি। আমরা দেখেছি জনসাধারণের মাঝে একটা অসহিষ্ণু ভাব কাজ করেছে। হঠাৎ করেই আমরা কোন কিছু পরোয়া না করেই বিনোদন কেন্দ্র, সামাজিক অনুষ্টানাদি তথা বিয়ে, শাদী, মেজবান কিংবা অন্যান্য অনুষ্টানে যোগদানের মাধ্যমে নিজেই নিজের বিপদ সৃষ্টি করেছি। যার ফলে উদ্বেগজনকহারে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। তাই এখনই যদি শক্ত হাতে এর নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে সবাইকে এর খেসারত দিতে হবে। এসব প্রয়োজনীয়তা উপলব্দি করে সরকার জনগনের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে আগামী ৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আর এসব বিধিনিষেধ কঠোরভাবে পালনের জন্য জনগনকে সচেতন করতে আমাদের এই পদযাত্রা। কঠোর বিধিনিষেধ ছাড়া সরকারের কাছে অন্য কোন পথও খোলা ছিলোনা। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়ে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সহজে বাজারজাতকরণে বিশেষ দৃষ্ঠি দানেরও আহবান জানান তিনি। যাতে উৎপাদিত পন্য নষ্ট হয়ে কৃষক সমাজ আর্থিক ক্ষতির সম্মূখীন না হয়।

তিনি চট্টগ্রামের করোনা চিকিৎসায় সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ এবং সাধারণ শয্যার তথ্য একটি সেন্ট্রাল এ্যাপসের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রার্থীদের নিকট জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যাতে করে প্রতিদিন কোন হাসপাতালে কতোটি আইসিইউ অথবা সাধারন শয্যা ব্যবহৃত হচ্ছে আর কতোটি খালি আছে তা সহজেই এক ক্লিকে চিকিৎসা প্রার্থীরা জানতে পারেন। এতে করে চিকিৎসা প্রার্থীরা দ্রুত সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে তাদের রোগীর চিকিৎসা কাজ সেরে ফেলতে পারবে। অযথা এক হাসপাতাল থেকে এক হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ভোগান্তির শিকার হবেন না। তিনি বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে গতবারের করোনা পরিস্থিতির মতো মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি না খেলারও সবিনয় অনুরোধ জানান।

এছাড়া করোনা সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংকের কিস্তি আদায় আগামী তিন মাস স্থগিত রাখা যায় কিনা সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট অনুরোধ জানান। স্থগিত কিস্তি তিন মাস পর সুদ বিহীন সহজ শর্তে গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায়েরও পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন আমরা দেখতে পাচ্ছি কিছু কিছু কমিউনিটি সেন্টার মালিক স্থানীয় প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করে এখনো সামাজিক অনুষ্টানাদি পরিচালনা করছে। এতে করে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়ন প্রশ্নের সম্মূখীন হচ্ছে। অবিলম্বে এ সমস্ত কর্মকান্ড কঠোর হস্তে দমন করার জন্য আইনশৃংখলা বাহিনীসহ প্রশাসনের নিকট আহবান জানান তিনি। লকডাউন চলাকালে স্বল্প আয়ের মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্য তিনি বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন আমি এ শহরের মানুষ, এ শহরে আমার জন্ম। আমি কোন পদে থাকি বা না থাকি সদা সর্বদা নগরবাসীর পাশে থাকবো। তিনি নগরবাসীকে যে কোন সমস্যা কিংবা অসুবিধায় নাগরিক উদ্যোগের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান। নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনে আইন শৃংখলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে সমসময় মানুষের পাশে থাকবেন তিনি। তিনি যে কোন প্রয়োজনে ০১৭১৩-১১০৮৪৬ অথবা ০১৭৭২-৫০০৭০০ এই নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

এ সময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মোরশেদ আলম, মো. বাবলু, মঈনুল আলম জয় প্রমূখ।

Advertisement