ফেসবুকে রাতভর গুজব

42

দেশের চলমান আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নানা খবর সামনে আসছে। এর মধ্যে সঠিক খবরের পাশাপাশি রয়েছে অনেক গুজবও। গতকাল শনিবার সারা রাত গুজব ও অসত্য তথ্য ছড়াতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকজুড়ে।

Advertisement

শনিবার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এরপর থেকেই একের পর এক মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এ ঘোষণা দেন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে শাহবাগে। পরে রাত ৯টার দিকে শাহবাগ ছাড়েন তারা।

শনিবার রাতে ফেসবুকে শিক্ষার্থীদের রাতভর শাহবাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থান, শাহবাগে অবস্থান, আন্দোলনকারীদের বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে ও দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে এরকম নানা গুজব প্রচার হয়েছে।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ‘৭ মিনিটে পরিস্কার’ এরকম একটি পোস্ট দেখা যায়। যার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।

শাহবাগ ও টিএসসিতে সারারাত শিক্ষার্থীদের অবস্থান-

‘শিক্ষার্থীরা শাহবাগ ও টিএসসিতে অবস্থান করছেন। সরকারের পদত্যাগের পর তারা ঘরে ফিরবে’। এমন পোস্ট দিয়ে রাতভর গুজব চলে। পরে রাত ৩টার দিকে শাহবাগ ও টিএসসিতে গিয়ে কোনো জমায়েত দেখা যায়নি।

সমন্বয়ক সার্জিসের বাসা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার-

রাতে আরেকটি পোস্টে দেখা যায় এক হাজার টাকার বান্ডিলের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করা সার্জিসের বাসা থেকে দুই কোটি টাকা উদ্ধার করেছে র‍্যাব-১০। তবে যাচাই করে দেখা যায়, যে ছবিটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে সেটি কয়েকদিন আগে এক তরুণী একটি গ্রুপে পোস্ট দেন। পোস্টে লেখা ছিল, ‘আব্বুর পেনশনের টাকা ব্যাংক থেকে উঠিয়ে নিলাম।’

তারকা ও ইউটিউবারদের ছবি দিয়ে ভুয়া পোস্ট-

রাতভর দেশের পরিচিত ইউটিউবার, ইনফ্লুয়েন্সার ও অভিনেতাদের নামে ছবিসহ ভুয়া পোস্ট করা হয়। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, ভারতীয় অভিনেতা শাহরুখ খান, অভিনেত্রী কাজলের ছবি দিয়ে পোস্ট করা হয়, ‘কোটা আন্দোলনের পাশে ছিলাম, এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পাশে নাই’। টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক ও ইউটিউবার রাফসান দ্যা ছোট ভাই -এর ছবি দিয়েও একই কথা পোস্ট করা হয়। তবে তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে গিয়ে এ ধরনের কোনো পোস্ট দেখা যায়নি।

রাতেই দেশ ছাড়ছেন কোটা আন্দোলনের সমন্বয়করা-

বেশ কয়েকটি গ্রুপে পোস্ট দেওয়া হয়, রাতের মধ্যে দেশ ছাড়ছেন কোটা আন্দোলনকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। তাদের দেশ ছাড়তে দেবেন না। ১ দফার হিসাব বাকি আছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ে দেশের প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে। এরপর আন্দোলন ঘিরে হামলা, মৃত্যু, গ্রেপ্তারে বদলে গেছে পুরো দৃশ্যপট।

Advertisement