পছন্দের কর্তাদের কাঁধে চড়ানোর মাশুল

72

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বিসিএস অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে বাহিনীটির প্রধানের দায়িত্ব পান। চাকরির স্বাভাবিক মেয়াদ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি অবসরে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তাকে একই পদে ফের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার। তবে এখানেই শেষ নয়, চুক্তির ওই মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে গত ৫ জুলাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইজিপি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। অবশ্য এবার আর ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়নি তার। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট অবসরে পাঠানো হয় তাকে। আর এর এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে গত ৩ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে আট দিনের রিমান্ডে আছেন। তার প্রতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রবল দুর্বলতা থাকায় পুলিশের রেকর্ড ভেঙে পরপর দুই দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান বলে অভিযোগ রয়েছে।

Advertisement

আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দ্বিতীয় দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না দিলে আইজিপি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসানের। তিনি যাতে আইজিপি হতে না পারেন এবং পরবর্তী সময়ে নিজের আইজিপি পদে যাওয়ার পথ সুগম করতে এসবির তৎকালীন প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম শেখ হাসিনাকে ম্যানেজ করেন বলে পুলিশে আলোচনা রয়েছে। যদিও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দ্বিতীয় দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিতে বারবার অনীহা প্রকাশ করেও ব্যর্থ হন। একইভাবে অভিজ্ঞ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ডিঙিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয় হাবিবুর রহমানকে। এ দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতোই পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলোতে নিজেদের ‘অতি পছন্দের’ লোকজনকে বসিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। তারপরও ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে শেষমেশ তার পদ রক্ষা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যার ঘটনায় এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সাবেক আইজিপিসহ পুলিশের ১১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন সাবেক আইজিপি, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও একজন কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। মামলার আসামি হওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা গ্রেপ্তারের আশঙ্কা করছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন আত্মগোপনে। বিশেষ করে বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম, ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ, ডিএমপির বিভাগের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় জোয়ার্দারসহ আলোচিত কর্তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে, গত ১৬ বছরে বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের বহু মেধাবী ও চৌকস কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বিবেচনা ও কতিপয় কর্মকর্তার পছন্দ না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন ও পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। মনোবেদনা নিয়ে তাদের অনেকেই চলে গেছেন অবসরে। আবার কারও বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার পরও কৌশলে পদোন্নতি বাগিয়ে নিয়েছেন। মাসখানেক আগে রাষ্ট্রক্ষমতার পট-পরিবর্তনের পর অনেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন ও পদোন্নতি পেয়েছেন, যদিও তাদের মধ্যে কেউ কেউ গত ১৬ বছরে সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে পুলিশে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের ইতিহাসে আইজিপির মেয়াদ বাড়িয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ঘটনা নেই। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের গদি রক্ষা করতে পছন্দের জুনিয়র কর্মকর্তাদেরও পদোন্নতি ও ভালো স্থানে পোস্টিং দিয়েছেন। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দুই দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন। প্রথম দফায় দিয়েছেন দ্বাদশ নির্বাচনের আগে। দ্বিতীয় দফায় দেন গত জুলাই মাসে। তবে দ্বিতীয় দফার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সময় তিনি তা নিতে চাননি। তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে অবসরে যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানান। এমনকি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবকেও অনুরোধ করেছিলেন তাকে আর যাতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া না হয়। কিন্তু অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান যাতে আইজিপি হতে না পারেন, সেজন্য এসবির তৎকালীন প্রধান মনিরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের অনুরোধ না রেখে তাকে ফের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন শেখ হাসিনা। এ নিয়ে পুলিশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। চাকরিজীবনে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কোনো বদনাম ছিল না। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থী ও নিরীহ লোকজন পুলিশের গুলিতে মারা গেলে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, শেখ হাসিনা পুলিশকে দলীয়করণ করেছেন। যাকে পছন্দ হয়েছে তাকে পদোন্নতিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টিং দিয়েছেন। আবার রাজনৈতিক বিবেচনায় যোগ্য কর্মকর্তাকে পদোন্নতি না দিয়ে ডাম্পিং স্থানে (নিষ্ক্রিয়) ফেলে রেখেছেন। সিনিয়রদের ডিঙিয়ে জুনিয়রদের ডিএমপি কমিশনারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের দায়িত্বশীল পদে পদায়ন করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আগেও দলীয় বিবেচনায় পদোন্নতি ও পদায়ন হয়েছে। তবে এতটা নগ্নভাবে হয়নি। এত কিছুর পরও ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেননি শেখ হাসিনা, পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে তাকে।

যেসব কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন : সংশ্লিষ্টরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে পুলিশে বিপুলসংখ্যক সদস্য নিয়োগ দেওয়া দেয়। যাদের মধ্যে অনেক বিসিএস ক্যাডারও রয়েছেন। পুলিশে দলীয় আনুগত্য থাকলেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন হয়ে আসছিল। বিশেষ করে আইজিপি, এসবি প্রধান, র‌্যাব মহাপরিচালক ও ডিএমপি কমিশনারের পদ ছিল বেশি লোভনীয়। এসব পদে যেতে কেউ কেউ কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আবার এসব পদের কোনোটিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার পছন্দও তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ওয়ান ইলেভেনের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নূর মোহাম্মদ আইজিপি ছিলেন। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তাকে সরিয়ে দিয়ে হাসান মাহমুদ খন্দকারকে আইজিপি পদে নিয়োগ দেন শেখ হাসিনা। তাকে হটাতে তৎকালীন অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) এ কে এম শহীদুল হক শেখ সেলিমকে দিয়ে নানাভাবে চেষ্টা চালান। কিন্তু শেখ হাসিনার কারণে তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। হাসান মাহমুদের মেয়াদ শেষ হলে শহীদুল হক হন আইজিপি। কিছুদিন পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাকেও সরানোর চেষ্টা হয়। তবে শেখ সেলিম ও গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের ম্যানেজ করে টিকে যান শহীদুল হক। তারপর আইজিপি পদে নিয়োগ পান ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এরপর পুলিশপ্রধানের পদে আসেন আলোচিত কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ। এর আগে তিনি ডিএমপি কমিশনার ও র‌্যাব মহাপরিচালক ছিলেন। চাকরির মেয়াদ শেষ হলে তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে নানা জায়গায় জোর তদবির চালান। কিন্তু তাকে সে সুযোগ দেননি শেখ হাসিনা। তখনকার র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আইজিপি পদে নিয়োগ দেন। রেকর্ড ভেঙে তাকে দুই দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাছাড়া ডিএমপি কমিশনার পদে অষ্টম ব্যাচের মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ও সিআইডির ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমানকেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে ১৭ ব্যাচের হাবিবুর রহমানকে ডিএমপি কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। অথচ তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ ও মেধাবী ১২ ও ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা থাকার পরও তাদের ডিএমপি কমিশনার পদে নিয়োগ দেননি শেখ হাসিনা। এসবির সাবেক প্রধান (গ্রেড-১) মনিরুল ইসলামকেও একইভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সপ্তম, অষ্টম ও ১২তম ব্যাচের মেধাবী কর্মকর্তা থাকার পরও এসবিপ্রধান করা হয়নি তাদের। সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, শিল্প পুলিশের প্রধান মো. মাহাবুবর রহমান, হাইওয়ে পুলিশের প্রধান শাহাবুদ্দিন খানসহ রেঞ্জ ডিআইজি, সব মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলার এসপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয় শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পছন্দ অনুযায়ী। ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকার পরও তাকে সরানো হয়নি। বিতর্ক থাকার পরও সরানো হয়নি সিটিটিসির প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকেও।

যোগ্যতা থাকলেও হয়নি পদোন্নতি-পদায়ন : পুলিশ ক্যাডারের সপ্তম ব্যাচ থেকে ২৭তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, শতাধিক কর্মকর্তা পদোন্নতি পাননি গত ১৬ বছরে। সপ্তম ব্যাচের মুহাম্মদ মাহবুব মহসীন ও হেলাল উদ্দিন বদরীর পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা থাকলেও তারা ডিআইজি হিসেবেই অবসরে যান। অষ্টম ব্যাচের পদোন্নতি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে অবসরে গেছেন দুই কর্মকর্তা। এসপি পদে থেকে অবসরে যাওয়া মতিউর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, পদোন্নতি পেতে নানাভাবে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি।

একই ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত হাবিবুর রহমান বলেন, ‘অনেক কষ্ট নিয়ে কিছুদিন আগে অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে অবসরে গিয়েছি। আমার ব্যাচের অনেকেই পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত আইজিপি হয়েছেন।’

অষ্টম ব্যাচের আরেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল্লাহেল বাকী ডিআইজি হিসেবে অবসরে গেছেন। ১২তম ব্যাচের আট ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি আটজন ও এসপি পদের দুজনের পদোন্নতি হয়নি। ১৫তম ব্যাচের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও এসপি পদের বেশ কয়েকজন পদোন্নতি পাননি। এরকম প্রতিটি ব্যাচেরই বহু যোগ্য কর্মকর্তার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পদোন্নতি ও পদায়ন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

‘পদোন্নতিবঞ্চিত’ ১২তম ব্যাচের এক কর্মকর্তা বলেন, যারা তাকে স্যার সম্বোধন করতেন, তারা পদোন্নতি পেয়ে ওপরে চলে গেছেন। এখন আর তাকে স্যার সম্বোধন করেন না, তিনিও তাদের তুমি সম্বোধন করেন না। কোনো সম্বোধন ছাড়াই দৈনন্দিন কাজ চালিয়ে গেছেন।

অন্যান্য ক্যাডারেও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ : শুধু পুলিশই নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদকালে অন্যান্য ক্যাডারেরও বহু কর্মকর্তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেন শেখ হাসিনা। যাদের মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক (লিয়েনে কর্মরত) বেগম শরিফা খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী, ইরাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল বারী, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্র্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী সদস্য মো. খাইরুল ইসলাম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।

তিন সাবেক আইজিপির কর্মকাণ্ডে পেশাদারিত্ব হারায় পুলিশ : হত্যা মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও একেএম শহীদুল হক গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শহীদুল হক, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ তিনজন প্রধানের দায়িত্বে থাকাকালে বাহিনীর সদস্যরা পেশাদারিত্ব হারায় বলে মনে করেন পুলিশ সদস্যরাই। তাদের মতে, শেখ হাসিনার সরকারের আস্থাভাজন হতে উচ্চাভিলাষী ওই তিন কর্মকর্তা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন-পীড়ন, মিথ্যা অভিযোগের মামলায় ফাঁসানো, হামলা ও গুমের মতো কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। আরও কিছু উচ্চাভিলাষী অপেশাদার কর্মকর্তা নিয়ে একটি বলয় তৈরি করেছিলেন তারা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন এ কর্মকর্তারা। ব্যক্তিস্বার্থে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে পেশাদারিত্ব ধ্বংসের জন্য দায়ী এসব কর্মকর্তা। সাবেক এ তিন আইজিপির আমলেই পুলিশে বৈষম্য ও লাগামহীন দুর্নীতির যাত্রা শুরু হয়।

 

Advertisement