চট্টগ্রামে ছাত্র জনতার সমাবেশ

পতিত স্বৈরাচারের দোসররা যে রুপেই ফিরুক প্রতিরোধ করা হবে

34

একটি ধর্মীয় সংগঠনের অনুসারীরা হাজারিগলিতে তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়েছে। পতিত স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওই উগ্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। তাদের সেই স্বপ্ন ছাত্র জনতা রাজপথে রুখে দেবে।

Advertisement

পুলিশের উপর এসিড নিক্ষেপের প্রতিবাদে বুধবার (৬ নভেম্বর)  বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার রাতে সন্ত্রাসী আক্রমণের প্রতিবাদে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।

রাসেল আহমেদ  বলেন, ‘গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশের মানুষ এক রক্তক্ষয়ী কিন্তু অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছে। প্রবল গণরোষের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। সনাতন ধর্মের অনুসারীদের  রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে আওয়ামী লীগ। পতিত স্বৈরাচারকে পুনর্বাসন করার স্বপ্ন ছাত্র জনতা সফল হতে দেবে না।’

রাসেল আহমেদ আরও বলেন, ‘হাজারীগলিতে হামলার সাথে যারা জড়িত ছিল তারা ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিয়েছে। আর ফেসবুকে যে মিথ্যা প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে জানতে পেরেছি, একটি উগ্রবাদী কুচক্রী সংগঠনের সমর্থকরাই এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িত রয়েছে।’

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক  এজিএম বাপ্পী, ইবনে হোসাইন, হামিম আবদুল্লাহ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক  এজিএম বাপ্পী বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি অংশ। একটি উগ্রবাদী সংগঠন দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য নানা ঘটনা ঘটাচ্ছে। ছাত্র জনতার  বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া স্বৈরাচারের দোসরদের রাজপথে মোকাবিলা করা হবে।’

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার প্রোফাইলে একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন। সেখানে ইসকন নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য ছিল। ফটোকার্ড সম্বলিত সেই পোস্ট ৫ নভেম্বর নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করেন হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারের মোল্লা স্টোর নামে দোকান মালিক ওসমান গণি। আর সেই পোস্টে ক্ষুব্ধ হয়ে একইদিন বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয়দের একাংশ সেই দোকান ভাঙচুর করে এবং ওই ব্যবসায়ীর ওপর আক্রমণ চালায়।একপর্যায়ে তাকে অবরুদ্ধ করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় বিক্ষুব্ধরা পোস্টদাতা ওই ব্যক্তিকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হেফাজতে নিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর চড়াও হয় বিক্ষুব্ধরা। এরপর তারা পুলিশ ও সেনাসদস্যদের ওপর ‘এসিড’ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা সংঘর্ষে জড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে। এরপরই জড়িতদের গ্রেফতারে রাত আনুমানিক ১১টা পর্যন্ত অভিযান চালায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা।মঙ্গলবার রাতে হাজারীগলিতে পুলিশের ওপর এসিড নিক্ষেপ, ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে সাত জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে যৌথবাহিনীর অভিযানে প্রায় ৮০ জনকে আটক করা হয়।

Advertisement