গিনেস বুকে স্থান পেল ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’

275

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। মঙ্গলবার ইমেইল বার্তায় এ খবর জানার পর সারা দেশের মতো বগুড়াবাসীদের মাঝে আনন্দের জোয়ার বইছে।

Advertisement

এ প্রকল্পের উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক ইয়ালিদ বিন রহমান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ ইমেইল বার্তায় তাকে এ তথ্য জানিয়েছে।

জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ফুটে তুলতে গত ২৯ জানুয়ারি শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা গ্রামে প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে (১২শ’ বর্গমিটার) চীন থেকে আনা ডিপ ভায়োলেট রঙের হাইব্রিড ও দেশের ডিপ গ্রিন ধানের চারা রোপণ করা হয়। এখন সেই চারাগুলো বড় হয়ে তাতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দেখা যাচ্ছে।

শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের উদ্যোগে ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিকৃতি তৈরির কাজ শুরু করে।

আয়োজকরা জানান, শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দিতে গত বছর থেকে কাজ শুরু হয়। চীন থেকে আমদানি করা হয় বেগুনি রঙের (এফ-১) ও দেশি সবুজ হাইব্রিড ধানের চারা। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন ১২০ থেকে ১৩০ জন নারী শ্রমিক কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ জন পুরুষ শ্রমিক ছিলেন।

এ শস্যচিত্রের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে সাত মাসের জন্য ১০০ বিঘা জমি ইজারা নেওয়া হয়েছে। ফসল উঠার পর মে মাসের দিকে জমিগুলো ফেরত দেওয়া হবে।

এদিকে শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি পরিদর্শনে ৯ মার্চ মঙ্গলবার গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামের প্রকল্প এলাকায় আসেন।

প্রকল্প পরিদর্শন শেষে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের প্রতিনিধি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহম্মদ বলেন, তারা সাক্ষী হিসেবে পরিদর্শনে এসেছেন।

তারা কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেতে সকল শর্ত পূরণ হয়েছে। চীনে শস্যচিত্র ছিল ৭৫ বিঘা জমিতে আর এখানে ১০০ বিঘা জমিতে। কোনো কৃত্রিমতা নেই। ১২শ’ বর্গমিটার জমিতে বঙ্গবন্ধু শস্যচিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

ন্যাশনাল এগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ডেপুটি হেড অব অপারেশন এবং শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু প্রকল্পের হেড অব অপারেশন কৃষিবিদ মো. আল-আমিন জানান, এ প্রকল্পে তারা সার্বিক সহযোগিতা ও অর্থায়ন করেছেন। তারা চীনের চং চিং জং ই সিড কোম্পানি লিমিটেড থেকে এ ধান বীজ সংগ্রহ করেন। কারিগরি সহায়তা দেন ওই প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র এগ্রোনমিস্ট মি. লিং জিয়া হু।

কৃষিবিদ মো. আল-আমিন আরও জানান, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দুই প্রতিনিধি গত ৯ মার্চ পরিদর্শন শেষে রিপোর্ট দাখিল করেন। এতে সন্তুষ্ট হয়ে কর্তৃপক্ষ ‘শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু’ গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দিয়েছেন। বিষয়টি মঙ্গলবার ইমেইল বার্তায় ন্যাশনাল অ্যাগ্রোকেয়ার ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক ইয়ালিদ বিন রহমানকে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি আশা করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংক্রান্ত দলিল চলে আসবে।

Advertisement