মুগ্ধ-স্নিগ্ধ দু’জন একই ব্যক্তি নন, জমজ ভাই

50

হঠাৎ করে আলোচনায় শহীদ মুগ্ধ। আর এই আলোচনার শুরুটা হয় মুগ্ধকে নিয়ে ফেসবুকের কিছু পোস্টকে কেন্দ্র করে। যেই পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, মুগ্ধ মারা যাননি, মুগ্ধ নামে কেউ না কি ছিলেনই না। এমনকি মুগ্ধ-স্নিগ্ধ দুই ভাই নয়, মুগ্ধই স্নিগ্ধ ছিল, মানুষ একজনই।

Advertisement

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নাম বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের মধ্যে খাবার পানি ও বিস্কুট বিতরণ করছিলেন তিনি।

অথচ বুধবার (২০ নভেম্বর) রাত থেকে মুগ্ধের মৃত্যু নিয়ে সংশয় ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট করা হয়। তার মধ্যে একটি পোস্টে দাবি করা হয়, ‘মুগ্ধ মারা যায়নি, মুগ্ধ নামে কেউ ছিলই না! মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ দুই ভাই নয়, মুগ্ধই স্নিগ্ধ ছিল। মানুষ একজনই!’

মুগ্ধের মৃত্যুর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে সাপোর্টারস অব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামের একটি গ্রুপের পোস্টে লেখা হয়, ‘মুগ্ধর ডেডবডির ছবি কেউ দেখে নাই, মুগ্ধর পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, জানাজা, কবর কই?’

তবে এর জবাব দিতেও ছাড়েনি জুলাই আগস্ট আন্দোলনের সমর্থকরা। শারমির হাফিজা রূপকথা নামে একজন বলেছেন, মুগ্ধরা মরে না, তারা চিরদিন বেঁচে থাকবে, আমাদের সকল মানুষের মনে। তাদের এ আত্মত্যাগ যুগ যুগ ধরে সবাই মনে রাখবে। আল্লাহ মুগ্ধকে বেহেশতের উচ্চতর শিখরে পৌঁছে দিক।

তবে ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে, মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ পৃথক দুই ব্যক্তি। তারা দুজন যমজ ভাই।

ওপেন সোর্স অনুসন্ধানের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত মুগ্ধ ও স্নিগ্ধের একসঙ্গে তোলা অসংখ্য ছবি ও ভিডিওর বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে তারা।

এদিকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দাবিগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পরিচালিত ফ্যাক্ট-চেকিং ফেসবুক পেজ থেকে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে জানানো হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুগ্ধকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া এই দাবিটি ভুয়া।

পেজটির এক পোস্টে বলা হয়, গত ১৮ জুলাই, উত্তরার আজমপুরে বিক্ষোভকারীরা পিপাসার্ত হয়ে পড়লে তিনি তাদের জন্য পানি ও খাবার নিয়ে ছুটে যান।

পোস্টে আরও বলা হয়, মৃত্যুর ১৫ মিনিট আগে ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় তিনি (মুগ্ধ) বিক্ষোভকারীদের পানির বোতল ও বিস্কুট বিতরণ করছেন। বিকেল ৫টার দিকে উত্তরার আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে থাকা অবস্থায় তাকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার কপাল ভেদ করে মাথার ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তার মরদেহ উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Advertisement