কক্সবাজারে বসতবাড়িতে ঢুকে এক নারীকে পিস্তল ঠেকিয়ে তিন লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাদা পোশাক পরা তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
সোমবার বিকালে শহরের মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী রিয়াজ আহমদের স্ত্রী রোজিনা খাতুন এই ছিনতাইয়ের শিকার হন। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় এক পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়। পরে ৯৯৯ ফোন করে কক্সবাজার সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।
এর পর আরও দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। দ্রুত বিচার আইনে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি অপারেশন মোহাম্মদ সেলিম।
গ্রেফতার তিন পুলিশ সদস্য হলেন– এসআই নুর হুদা ছিদ্দিকী, কনস্টেবল আমিনুল মমিন ও মামুন মোল্লা।
ওসি অপারেশন মোহাম্মদ সেলিম জানান, বাদীর এজাহার মতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র জানায়, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম কুতুবদিয়াপাড়ার রিয়াজ আহমদের স্ত্রী রোজিনা খাতুন গ্যাসের দোকান করার জন্য তার আত্মীয়স্বজন থেকে সোমবার তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন।
বিকাল ৪টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ৫-৬ জন সাদা পোশাক পরা লোক তার বসতবাড়িতে যায়। পরে তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে টাকা দাবি করে। রোজিনা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বেধড়ক মারধর করে সাদা পোশাক পরা লোকজন।
একপর্যায়ে রোজিনা তার কাছে থাকা তিন লাখ টাকা সাদা পোশাকধারী পুলিশের হাতে তুলে দেন। এ সময় রোজিনার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। এ সময় অটোরিকশা থেকে একজনকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা।
পরে ৯৯৯ ফোন করে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
পরে কক্সবাজার জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সবাইকে বিষয়টি অবগত করে তদন্তে নামে। একপর্যায়ে সোমবার রাতে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা নিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
পাশাপাশি এ ঘটনা নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কক্সবাজার সদর থানায় অবস্থান নেয় জেলা পুলিশের এসপি হাসানুজ্জামান।
সাদা পোশাকধারী পুলিশের ছিনতাইয়ের শিকার রোজিনা খাতুনের স্বামী রিয়াজ আহমেদ জানান, কক্সবাজারের সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে গ্যাসের দোকান করার জন্য আমার স্ত্রী এই টাকাগুলো তার আত্মীয়স্বজন থেকে সংগ্রহ করেন।
পরে বাড়ি ফিরলে সিএনজি করে ৫-৬ জনের একটি দল বাসায় ঢুকে তাকে মারধর করে পিস্তল ঠেকিয়ে টাকাগুলো ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় ৯৯৯ ফোন করে বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানানো হয় এবং ঘটনাস্থলে আটককৃত একজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পাশাপাশি গুরুতর অবস্থায় আমার স্ত্রীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।