ডবলমুরিং থানায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন

222

নগরীর ডবলমুরিং থানায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে। থানার উপ পরিদর্শক কিশোর মজুমদার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সমাজবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমাদের সময় চচট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ, দৈনিক সমকাল চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সারওয়ার সুমন।

Advertisement

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের স্মৃতিচারণ করেন ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) পশ্চিম জোনের উপ কমিশনার ওয়ারিশ।

স্বাগত বক্তব্যে ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য যেভাবে বাংলাদেশ পুলিশ রাজারবাগ থেকে প্রথম প্রতিরোধ গড়েছিল। একইভাবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, মানুষের জানমাল নিরাপত্তা রক্ষায়ও বাংলাদেশ পুলিশ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশের যে অদম্য অগ্রযাত্রা, সে অগ্রযাত্রায় সহায়ক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দৈনিক আমাদের সময় ব্যুরো প্রধান হামিদ উল্লাহ বলেন, ‘ ৭ মার্চের ভাষণ কখনও জীর্ণ হবেনা, এটা যতবার শুনি ততবারই উজ্জীবিত হই। পুলিশের সাথে মানুষের যে সম্পৃক্ততা সেটা সিএমপি ভিন্ন রূপ দিয়েছে। সিএমপির জনসম্পৃক্ত কাজের ফলে মানুষ পুলিশের প্রতি আরও বেশি আস্থাশীল। ‘

দৈনিক সমকাল ব্যুরো প্রধান সারওয়ার সুমন বলেন, ‘ ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য আমাদের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। এবং নিজ নিজ পরিবার থেকেই করতে হবে এর সূচনা।’ সিএমপি পেশাদারিত্ব ও মানবিকতাকে একই সূতোয় গেঁথেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ড. অনুপম সেন বলেন, ‘ ১৯৪৮ সাল থেকেই আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়। ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালি স্বাধীনতার মন্ত্র পাই। সেই মন্ত্রেই সশস্ত্র হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয় ছিনিয়ে আনে বাংলাদেশ। ‘ তিনি বলেন, ‘ বঙ্গবন্ধু প্রতি পাড়া মহল্লায় সংগ্রাম কমিটি গঠন করতে বলেন। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও সংগ্রাম কমিটি গঠন করি। ১৭ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিনই লালদিঘী মাঠে কমিটির কর্মসূচি পালন করা হত।’ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই এত উন্নয়ন করতে পারছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশ এক কোটি টন শষ্য উৎপাদন করত, এখন চার কোটি টন শষ্য উৎপাদন করে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতু করেছে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল করছে, ইকোনমিক জোন করছে, দুই হাজার ডলারের উপরে মাথাপিছু আয় হয়েছে, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে- এগুলো সবই হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে। উন্নয়নের যে ধারাবাহিকতা চলছে তা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০৫০ এর মধ্যেই আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘পাকিস্তানিদের অস্ত্র ছিল, গোলাবারুদের বিপরীতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণই ছিল সবচেয়ে বড় মরণাস্ত্র। এই ভাষণের আগে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ছিল না, সমরাস্ত্র ছিল না। কিন্তু এই ভাষণের পর বাংলাদেশের ৭ কোটি মানুষই সৈনিক হয়ে যায়। বাঙালির প্রতিটি হাতই তখন হয়ে উঠে অস্ত্র। বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণই আমাদের স্বাধীনতার রূপরেখা এঁকে দেয়।’ চট্টগ্রামে স্বাধীনতা যুদ্ধে পুলিশের ভূমিকার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ আমাদের অস্ত্র ছিল না। কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল খালেক পুলিশের অস্ত্রাগার খুলে আমাদের দেন। এই অপরাধে হানাদার বাহিনী নৃশংসভাবে তাকে হত্যা করে। ‘ ওসি আব্দুল খালেকের সম্মানে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি এলাকার যেকোনো একটি সড়কের নাম তার নামে নামকরণের দাবি জানান।

কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক বলেন, ‘ আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ। ২০ বছর পর উন্নত দেশে পরিণত হবে। কিন্তু তার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে এখনই।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ১৮ মিনিটের ভাষন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণ ভবন থেকে দেওয়া বক্তব্য সরাসরি প্রদর্শন করা হয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট প্রকাশিত সজীব ওয়াজেদ জয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা আর্টিকালটি স্ক্রিনে প্রদশন এবং পাঠ করে শুনান জনাব এসআই/নাঈমা, ডবলমুরিং মডেল থানা, সিএমপি, চট্টগ্রাম।

অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, মনোজ্ঞ সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন চ্যানেল আই ক্ষুদে গান রাজের প্রিয়া ভৌমিক।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম বাহাদুর, মোঃ শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী সবুজ সহ এলাকার সমাজ সেবক, ব্যবসায়িক প্রতিনিধি ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গগণ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement