জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ

29

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের নামে ভুয়া বিল জমা দিয়ে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের চেষ্টায় হাসপাতালটির তৎকালীন হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন পেলেই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়।

Advertisement

দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুচ ছাদায়েত বলেন, পরবর্তী পর্যায়ে করণীয় সম্পর্কে জানতে আমরা ঢাকার অপেক্ষায় আছি। কেন্দ্র থেকে মামলা করার অনুমোদন পেলে আমরা মামলা দায়ের করব।

২০২২ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তৎকালীন হিসাবরক্ষক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ ফোরকান ভুয়া ব্যয় মঞ্জুরিপত্র চট্টগ্রাম বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিসে উপস্থাপন করেন। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ে বিলটি বাতিল হওয়ার পর বিভাগীয় হিসাবরক্ষণ অফিস ফোরকানকে আটক করে। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে আনেন। ৩০ জুন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি।

দূদক সূত্র জানায়, দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক অভিযোগটি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে হিসাবরক্ষক মোহাম্মদ ফোরকান ও ঠিকাদার যোগসাজশ করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের চেষ্টার কথা উল্লেখ করা হয়। তদন্ত শেষে প্রতিবেদনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

এদিকে ভুয়া বিল জমা দেওয়ার ঘটনার পর প্রশাসনিক কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মোহাম্মদ ফোরকানকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হিসাবরক্ষক হিসেবে বদলি করে। কিন্তু তিনি সেখানে যোগ না দিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হন। সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে গত ২৩ মাস তিনি লৌহজংয়ে যোগ দেননি, রয়ে যান চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। এই ২৩ মাসের বেতনের জন্য তিনি বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। উচ্চ আদালতে মামলা চলাকালীন অবস্থায় নিম্ন আদালতের আদেশ কার্যকরের সুযোগ নেই। তাই নিম্ন আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও তিনি বেতন পাচ্ছেন না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আইন শাখার উপপরিচালক ডা. পরিমল কুমার পাল জানান, ফোরকানের বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলাও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চলমান আছে।

দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ভুয়া মঞ্জুরিপত্রে যে স্মারক ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি আসলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটসোর্সিং খাতে নিয়োজিত জনবলের বেতন-ভাতাদি পরিশোধের জন্য বরাদ্দ আদেশের স্মারক।

এ প্রসঙ্গে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, বিল জালিয়াতির বিষয়ে দুদকে একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। দুদক সেটি অনুসন্ধান করছে।

Advertisement