বীর উত্তম খেতাবটি জিয়াউর রহমানের কারণেই গৌরবান্বিত হয়েছে : আমীর খসরু

243

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম খেতাব পেয়ে গৌরবান্বিত হননি, বরং বীর উত্তম পদটি গৌরবান্বিত হয়েছে। বিএনপিতে অনেক খেতাবপ্রাপ্ত লোক আছেন কিন্তু আওয়ামী লীগে খেতাবপ্রাপ্ত লোক খুঁজে বের করতে হবে। জিয়াউর রহমান নাকি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, তাহলে তো এখন বাংলাদেশের অনেক বড় নেতা থেকে শুররু করে মাঠের কর্মী পর্যন্ত কেউ রেহায় পাবে না। তারা সংবিধানের বারোটা বাজিয়ে ফেলেছে। এসবেরও বিচার হবে।

Advertisement

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরের নাসিমন ভবনস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে আয়োজিত কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। আল জাজিরা ক্ষুদ্র একটি অংশ প্রকাশ করেছে। এতেই ভয়ে কম্পন শুরু হয়েছে সরকারের। আরও আসছে, আল জাজিরার পরবর্তী প্রতিবেদনে বহু লোকের নাম জড়িত আছে। তাতে সরকারের দেশে ও দেশের বাইরে পাতিলের খবরও বের হয়ে যাবে। প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটিও সদুত্তর পেলাম না। তারা শুধু প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের মধ্যে কম্পন শুরু হয়েছে। এসব সরকার বিদায়ের লক্ষণ। সমস্ত অপকর্মের দায়ভার নিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরে এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।

আমীর খসরু বলেন, রোজার পর, ঈদের পর এরকম দিনক্ষণ দেখে আন্দোলন হয় না। যে কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে, সেই কর্মসূচি আসবে। এখন প্রতিদিনই আন্দোলন। আমরা-তো নেমেই গেছি মাঠে, আর ফিরে যাবো না। এটাই-তো কর্মসূচি। সরকার বলছে, আড়িপাতার যন্ত্র আনার জন্য জাতিসংঘের সঙ্গে আমাদের চুক্তি আছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, তাদের সঙ্গে আমাদের এ রকম কোনো চুক্তি নাই। জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়ে সরকারের মুখে লাথি মেরে দিয়েছে। লজ্জা নাই তাদের। জাতিসংঘ বলছে, তোমরা মিথ্যাচার করছো। তিনি আরো বলেন, খুন, গুম, হত্যার নায়ক কারা? এগুলোর সঙ্গে জড়িত সরকার। প্রশাসনকে বলব, আপনারা কোনো দলের পক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন না, জনগণের পক্ষে দায়িত্ব পালন করুন। আপনারা যতই লাঠিপেটা করেন, গুম-খুন করেন, হত্যা করেন, দেশের মানুষ কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। দুর্নীতি এখন চরম শিখরে পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগের কিছু মানুষ রাষ্ট্রের সব সম্পদ কুক্ষিগত করে রেখেছে। সমস্ত জাতি আজ শঙ্কিত। আমরা চট্টগ্রাম থেকে অতীতেও আন্দোলনের সূচনা করেছি। চট্টগ্রাম থেকেই আন্দোলন গড়ে তুলব।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নয়, আমি তাদের সরকার বলি না। কারণ সরকার গঠন করে রাজনৈতিক দল। কিন্তু এরা কারা ? কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী, কিছু দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের লোক, এরাই এখন সরকারে। এরা একটা মাফিয়া রেজিম। কিন্তু চোরের দশদিন, গৃহস্থের একদিন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক বীর উত্তম জিয়াউর রহমান শুধু একজন সেক্টর কমান্ডার ছিলেন না তিনি ছিলেন রনাঙ্গনের বীর সেনানায়ক। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন বলেই আমরা স্বাধীন একটি রাষ্ট্র পেয়েছি। সরকারের মাফিয়া তান্ত্রিক চরিত্র আল-জাজিরার মতো বিশ্ব বিখ্যাত একটি চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে, কারণ জনগণ মাফিয়া এ সরকারের চেহেরা দেখতে পেয়েছে। জনগণকে সরকার তাদের অপকর্মের দিক থেকে ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা সাঁজানো মামলায় সরকার দুই বছরের সাঁজা দিয়েছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, মাঠে বসে আর বক্তব্য হবে না, এবার রাজপথে হবে আমাদের চূড়ান্ত ফয়সালা। তার জন্য চট্টগ্রামবাসী প্রস্তুত আছে।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ইভিএম একটি ডিজিটাল মেশিন। যেখানে আপনারা ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন সেটা চলে গেছে নৌকায়। আওয়ামী লীগও এমন একটা যন্ত্র যেখানে গেলে রাজাকার মুক্তিযোদ্ধা হয়, মুক্তিযোদ্ধা রাজাকার হয়। এসময় তিনি সাবেক মন্ত্রী শাহাজান খান কোন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন সে প্রশ্নও তোলেন। শহীদ জিয়াই চট্টগ্রাম থেকে উই রিভোল্ট বলে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছিলেন। যতদিন বাংলাদেশের পতাকা থাকবে, ততদিন শহীদ জিয়া বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে অমর হয়ে থাকবেন।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করে পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ.এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি এডভোকেট এনামুল হক।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, মো: মিয়া ভোলা, এড. আব্দুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দীন, এস এম সাইফুল আলম, এস.কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, কাজী বেলাল উদ্দীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল হালিম শাহ আলম, ইসকান্দার মির্জা, আবদুল মান্নান, আহবায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, শামসুল আলম, জয়নাল আবেদীন জিয়া, হারুন জামান, মোঃ আলী, মাহবুবুল আলম, নিয়াজ মো. খান, ইকবাল চৌধুরী, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস.এম আবুল ফয়েজ, নাজিম উদ্দিন আহমেদ, আর.ইউ চৌধুরী শাহীন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আবুল হাসেম, শামসুল হক, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী সিরাজ উল্লাহ, মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, শেখ নুরুল্লাহ বাহার, নগর অঙ্গসংগঠনের সভাপতিবৃন্দ মোশারফ হোসেন দিপ্তী, এইচ.এম রাশেদ খাঁন, মনোয়ারা বেগম মনি, সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ মোহাম্মদ শাহেদ, বেলায়েত হোসেন বুলু, জেলি চৌধুরী, থানা বিএনপির সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, হাজী বাবুল হক, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, মোশারফ হোসেন ডেপটি, মোঃ সেকান্দন, মো. সালাউদ্দিন, সরফরাজ কাদের রাসেল, আবদুল্লাহ আল হারুন, সাধারণ সম্পাদক জকির হোসেন, আফতাবুর রহমান শাহীন, জসিম উদ্দীন জিয়া, সাহাব উদ্দিন, জাহিদ হাসান, রোকন উদ্দিন মাহামুদ, আবদুল কাদের জসিম, জাহাঙ্গীর আলম, হাবিবুর রহমান, নগর ছাত্রদলের আহবায়ক সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, তাঁতি দলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।

Advertisement