নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর সবুজবাগে পোশাক কারখানার এক কর্মীকে (৩৫) চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার সনজীব কুমার দাস ও তার সহযোগী আনিকার পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সনজীব মাদারীপুর জেলার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মচারী।
আজ মঙ্গলবার (২ মার্চ) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আজগর আলী। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার প্রত্যেককে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার (১ মার্চ) দিবাগত রাতে মাদারটেক এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সবুজবাগ থানা পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সবুজবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাশেদ হাসান মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, ওই নারীকে ব্যাংকে চাকরি দেয়ার নাম করে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ মাদারটেকের একটি বাসায় ডেকে নিয়ে যান সনজিব দাস। তার সঙ্গে রাসেল, জামাল, আজিজুর রহমান ও আনিকা নামে এক নারী বাসায় ছিলেন। সেখানেই ওই নারীকে সনজীবসহ বাকিরা ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় সোমবার সবুজবাগ থানায় সনজিবকে ১ নম্বর আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আনিকা ও সনজিবকে গ্রেফতার করে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি রাশেদ হাসান।
ওই নারী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, পাঁচ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তার। এরপর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্বপরিচিত সনজিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে কুশল বিনিময়ের সময় তিনি তার সন্ধানে ব্যাংকে ভালো চাকরি থাকার কথা জানান। পরে চাকরি দেয়ার কথা বলে মাদারটেকের ওই বাসায় ডেকে নেন। একপর্যায়ে সেখানে তাকে গণধর্ষণ করা হয়। সেখানে উপস্থিত আনিকা এ কাজে তাদেরকে সহায়তা করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে সনজিব ওই নারীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, সনজীব কুমার দাসকে রেকর্ড কিপার পদ থেকে গত ১১/০৪/২০১৬ সালে বিআইডব্লিউটিএ’র সাবেক কমোডোর এম মোজাম্মেল হক ১৮.৭০৭.০৪৭.০০.০০.১০৩.২০১৬/৩৭০ স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
চিঠির সূত্রে জানা গেছে, সনজীব বিনা অনুমতিতে বিআইডব্লিউটিএ’র সচিবের কক্ষে প্রবেশ করে অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নিয়ম বিধি বর্হিভূত অসদাচরণ করেন। এইজন্য কর্তৃপক্ষের দফতর আদেশ নং-৬৭৮/২০১৬ তাং ২৮/০৩/২০১৬ ইং দ্বারা কর্তৃপক্ষের কর্মচারী চাকুরী প্রবিধানমালা-১৯৯০ এর ৪১(১) প্রবিধান অনুসারে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য বরখাস্ত করা হয়।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা মুঠোফোনে জানান, ‘তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিলো তা তদন্ত হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি আজ (মঙ্গলবার) ধর্ষণ অভিযোগ তাকে থানা পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে আদালতে সোপার্দ করা হয়। এই অভিযোগে কিছুক্ষন আগে অফিসের সিন্ধান্তে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’