কোথাও নিজেকে সরকারি দলের নেতা, কোথাও নিজেকে বিএনপি পরিচয় দিয়ে দিব্যি অপকর্ম করে যাচ্ছেন রাউজানের বাসিন্দা মোঃ জালাল।
রাউজানে নিজেকে আওয়ামীলীগ পরিচয় দেয়, অথচ চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক তিনি। বিগত ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি নাশকতা ও রাউজানের একটি হত্যাচেষ্টার মামলায় বর্তমানে তিনি কারাগারে। গত ১৫ই মার্চ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তবে ইতিমধ্যে সেই জালাল গরু ব্যবসার নামে অনেকের কাছে থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। একাধিক ভুক্তভোগী আদালতে এই সংক্রান্ত মামলাও করেছেন৷ অভিযোগ আছে ছাত্রদল নেতা জালালকে আওয়ামী লীগ বানাতে আর গরু ব্যবসার নামে বিভিন্ন অপকর্ম ও কিশোর গ্যাং সহ ইয়াবা ব্যাবসায় মদদ দিচ্ছে রাউজান কৃষক লীগের এক শীর্ষ নেতা মোঃ জিয়াউল হক সুমন (ওরফে টাকলা সুমন)।
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ১নং হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর সর্তা তোতা গাজীর বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে মোঃ জালাল। এক সময় বসবাস করতেন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায়৷ রাউজানের ছেলে হওয়ায়, সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর সাথে ছিল বেশ ঘনিষ্ঠতা। আর সেই সুবাদে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের কমিটির সহ-সম্পাদক পদও পেয়ে যান জালাল৷
গত ২০২৩ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান এলাকায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি সহ একাধিক স্থাপনায় ভাংচুর চালায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা।সেই ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার ভুক্ত ১৮ নং আসামি হন মোঃ জালাল। উক্ত ঘটনার পরপরই রাউজানে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।সেখানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিয়েই চালিয়ে যান নিজের ইয়াবা ব্যাবসা সহ সকল অপকর্ম এবং অবৈধ গরু ব্যবসা নামে টাকা আত্মসাৎ।
ভুক্তভোগী রাউজানের নাসির উদ্দিন ও ফটিকছড়ির মোকাররম হোসেন বলেন, “জালাল ব্যবসা করার নাম করে, গত কোরবানির ঈদে আমাদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়। আমরা পাওনা টাকা চাইতে ওর বাড়িতে গেলে দেখতে পাই সকল অপকর্মের পেছনে জালালকে মদদ দিচ্ছে সুমন (ওরফে টাকলা সুমন), মোঃ রফিক ওরফে (ট্যারা রফিক)।আমাদেরকে স্থানীয় নেতার ভয় দেখায়।”
রাউজান উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন (ওরফে টাকলা সুমন)-এর সাথে নিয়মিত সর্বত্র বিচরণ ছিল জালালের৷ সুমনেরই মদদে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম এবং গরু ব্যবসার নামে পায়তারা করে মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় কয়েক কোটি টাকা।
এ নিয়ে সুমনকে প্রশ্ন করা হলে সুমন বলেন, “জালাল আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে আসতো এবং বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছে। আমার সাথে তার কোনো ঘনিষ্ঠতা নেই।”
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, “সুমন নিজেও বিএনপির কর্মী ছিলেন। যদি সে আওয়ামীলীগের হতো তাহলে আমিই প্রথম জানতাম। কারণ আমি ১৫ বছর যাবৎ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি, বরং তার মদদে জালাল গরু ব্যবসার নামে বিভিন্ন মানুষের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ পেয়েছে। “নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন এই প্রতিবেদক কে বলেন- টাকলা সুমন, ট্যারা রফিক ও ইয়াবা জালাল এরা অত্র হলদিয়া ইউনিয়নে কিশোর গ্যাং সহ বিভিন্ন অপারাধের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তারা সাধারণ মানুষ কারো সাথে কিছু একটা হলেই কিশোর গ্যাং পাঠিয়ে মারধর ও ইয়াবা দিয়ে চালান করিয়ে দেওয়ার হুমকি সহ চাঁদা দাবি করে, তাদের ভয়ে সাধারণ লোকজন মুখ খুলতে চায়না, বর্তমান ইয়াবা জালাল জেলে থাকলেও তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে টাকলা সুমন ও ট্যারা রফিক।